গাইবান্ধার দুটি উপজেলায় পারিবারিক বিরোধ থেকে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দুজন নিহত হয়েছেন। সাদুল্লাপুরে কচু তুলতে গিয়ে চাচাতো ভাইয়ের হাতে ভাই খুন হন, আর সুন্দরগঞ্জে আম পাড়াকে কেন্দ্র করে ভাতিজার ছুরিকাঘাতে চাচার মৃত্যু হয়। শুক্রবার বিকেল থেকে রাতের মধ্যে দুটি ঘটনা ঘটে জেলার ফরিদপুর ও বেলকা ইউনিয়নে।
সাদুল্লাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের মীরপুর গ্রামে নিহত হন ফুয়াদ হোসেন (৪৫)। তিনি মৃত আফজাল হোসেন ওরফে দুলা মাস্টারের ছেলে। পুলিশ জানায়, মুক্তা বেগম নামে এক নারী তার বাবার কাছ থেকে ১৭ শতক জমি বন্ধক ও ১৮ শতক জমি বর্গা নিয়ে সেখানে কচু চাষ করেছিলেন। শুক্রবার বিকেলে তিনি স্বামী শাহারুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষেত থেকে কচু তুলছিলেন। এ সময় তার ভাই মামুন মিয়া এসে বাধা দেন। কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে মামুন তার বোনকে মারধর শুরু করলে চাচাতো ভাই ফুয়াদ হোসেন এবং তার স্ত্রী সান্তনা এগিয়ে এসে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু উত্তেজিত মামুন তার হাতে থাকা কাঁচি দিয়ে ফুয়াদের বুকে আঘাত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় ফুয়াদকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
ঘটনার পর পুলিশ মামুন মিয়াকে আটক করেছে। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার।
অন্যদিকে, রাতের দিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের তালুক বেলকা (মাঝবাড়ি) গ্রামে আম পাড়াকে কেন্দ্র করে ঘটেছে আরেকটি হত্যাকাণ্ড। নিহত জিয়ারুল ইসলাম (৪৪) ছিলেন মৃত জাফর আলীর ছেলে। পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে আম পাড়াকে কেন্দ্র করে নছিরন বেওয়াকে গালিগালাজ করেন তার ছেলে ইব্রাহিম আলী। এতে প্রতিবাদ করেন নছিরনের আরেক ছেলে জিয়ারুল। পরে দুই ভাইয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হলে ইব্রাহিমের ছেলে সাইফুল ইসলাম এসে চাচা জিয়ারুলের বুকে ছুরি দিয়ে আঘাত করেন। ঘটনাস্থলেই জিয়ারুলের মৃত্যু হয়।
এ সময় ছেলেকে রক্ষা করতে আসা জিয়ারুলের স্ত্রী আছমা বেগম ও ছেলে ইসমাইল হোসেনকেও ছুরিকাঘাত করেন সাইফুল। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ জানান, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে এবং জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে। ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, পারিবারিক সম্পত্তি ও সামান্য বিষয় নিয়ে সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনা বাড়ছে, যা সামাজিক বন্ধনকে দুর্বল করে দিচ্ছে। পুলিশ বলছে, পারিবারিক বিরোধে সহিংসতা ঠেকাতে সচেতনতা ও পারস্পরিক সমঝোতা জরুরি।
Leave a comment