খুলনায় ৬ লাখ টাকার জন্য নিজের ছেলে রিয়াদর হাতে নিহত হয়েছেন ৪০ বছর বয়সী গৃহবধূ শিউলী বেগম। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে নগরীর ট্যাংক রোডে রবিউল ইসলামের বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, হত্যার সময় মাথায় ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে এবং শ্বাসরোধের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে।
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) শাহজাহান আহম্মেদ জানান,
“ঘরে তালা ছিল। তালা ভেঙে আমরা ভেতরে ঢুকে খাটের ওপর শিউলীর লাশ পাই। ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য সিআইডি টিমকে তলব করা হয়েছে। হত্যার সঙ্গে কোনো আত্মীয় জড়িত কি না—তার তদন্ত চলছে।”
শিউলী বেগমের বড় মেয়ে কেয়া পুলিশকে জানিয়েছেন, তার মা মাত্র এক মাস ১০ দিন আগে সাগর নামে এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেন। নতুন বিয়ের পর শিউলী ট্যাংক রোডের ওই বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। পরিবারে ছিল মা, ছেলে রিয়াদ এবং স্বামী সাগর।
কেয়া জানান, সকালে ১০টার দিকে তার বাবা ফোনে জানায়, “আম্মুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। তুমি একটু যাও।” কেয়া সেই অনুযায়ী বাড়িতে যান, কিন্তু দরজায় তালা থাকায় ভেতরে ঢুকতে পারেননি। বিকেলেও কিছু জানা যায়নি। পরে সন্ধ্যায় যখন বাড়িতে ফিরে যান, দেখতে পান দরজায় তালা লাগানো। বাড়িওয়ালাদের সাহায্যে তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে খাটের ওপর শিউলীর মরদেহ পান।
কেয়া আরও বলেন,“সিসি ক্যামেরায় দেখা গেছে, আমার ছোট ভাই রিয়াদ সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে ঘর থেকে বের হয়েছে। ঘরে আমার মায়ের ৬ লাখের বেশি নগদ টাকা ছিল। ধারণা করি, টাকার জন্যই সে মা’কে হত্যা করেছে।”
ওসি শাহজাহান আহম্মেদ জানান, “মৃত্যুর কারণ, সময় ও ঘটনার ধরন যাচাই করার জন্য সিআইডি টিম তদন্তে নিয়োজিত। পুলিশ ধাপে ধাপে সমস্ত তথ্য বিশ্লেষণ করছে এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, রিয়াদকে গ্রেপ্তার করতে তল্লাশি চলছে। সিসিটিভি ফুটেজ, মোবাইল লোকেশন এবং পারিবারিক সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে আর কেউ জড়িত আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Leave a comment