খুলনার ফুলতলায় আছিয়া বেগম নামে এক গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর মো. হোসেন কাজী নামের এক যুবককে ছাদে পানির ট্যাংক থেকে নাটকীয়ভাবে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে ফুলতলা উপজেলার দামোদর ইউনিয়নের হ্যাচারীপাড়া মোড় সংলগ্ন একটি বাড়ি থেকে আছিয়া বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নিহত আছিয়া স্থানীয় শহীদ মোল্লার স্ত্রী।
আটককৃত হোসেন কাজী নড়াইল সদর উপজেলার বাসিন্দা রেজা কাজীর ছেলে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয়রা জানান, হত্যার পর এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে বাড়ির ছাদে পানির ট্যাংকের ভেতর লুকিয়ে থাকা হোসেনকে বের করে আনে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে প্রতিবেশীরা আছিয়া বেগমের বাড়ি থেকে চিৎকারের শব্দ শুনে ছুটে যান। দরজা বন্ধ থাকায় প্রথমে কেউ ভিতরে ঢুকতে পারেননি। কিছুক্ষণ পর বাড়ির ভেতর থেকে রক্তক্ষরণের চিহ্ন দেখা গেলে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
ফুলতলা থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে আছিয়া বেগমের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে। তখন বাড়ির ছাদে তল্লাশি চালিয়ে ট্যাংকের ভেতর লুকিয়ে থাকা অবস্থায় হোসেন কাজীকে আটক করে পুলিশ। স্থানীয়রা জানান, নিহত আছিয়া বেগম শান্ত-স্বভাবের গৃহবধূ ছিলেন। তার স্বামী শহীদ মোল্লা স্থানীয় একটি দোকানে কাজ করেন। পরিবারে কোনো দ্বন্দ্ব বা শত্রুতা ছিল না বলেও জানান তারা।
ফুলতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জেল্লাল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,“পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করেছে এবং সন্দেহভাজন হোসেন কাজীকে আটক করা হয়েছে। তিনি হত্যার পর বাড়ির ছাদের পানির ট্যাংকে লুকিয়ে ছিলেন। বর্তমানে তাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।”
তিনি আরও বলেন,“প্রাথমিকভাবে হত্যার কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত এখনই বলা যাচ্ছে না। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।”
আছিয়া বেগমের মৃত্যুর খবরে তার পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। স্বামী শহীদ মোল্লা ভেঙে পড়েছেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন,“আমার স্ত্রী কখনও কারও সঙ্গে ঝগড়া করেনি। কীভাবে, কেন তাকে মেরে ফেলল—বুঝতে পারছি না।”
Leave a comment