সাবেক ক্ষমতাসীন দলের নেতা সিদ্দিক নাজমুল আলম তার ফেসবুক পোস্টে সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে চরম ক্ষোভ ও হতাশা। নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে তিনি জানিয়েছেন, দলকে ভেতর থেকে দুর্বল করে দেওয়া কিছু দুর্নীতিবাজ নেতার বিরুদ্ধে কথা বললেই একদল সমর্থকের রোষানলে পড়তে হয়।
তিনি অভিযোগ করেছেন, যারা লুটপাট করে দলকে দুর্নাম ও জনসমর্থনহীন করে ফেলেছে, তাদের বিপক্ষে কথা বললেই ‘এখন ঐক্যের সময়’, ‘এখন এসব বলা যাবে না’—এই ধরনের যুক্তি দেখিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে চাপ দেওয়া হয়। অথচ পরে আবার তারাই সুবিধাভোগী হয়ে নেত্রীর চারপাশ ঘিরে থাকেন।
পোস্টে তিনি বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতির বিষয়েও অভিযোগ তোলেন। বলেন, সরকার বিদ্যুৎ খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছে, তবু বিগত সময়ে লোডশেডিংয়ের নামে সাধারণ মানুষকে কষ্টে ফেলা হয়েছিল। তিনি দাবি করেন, বিদ্যুৎ খাতের একজন শীর্ষ ব্যক্তি, যিনি বড় ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান, কৃত্রিম লোডশেডিং তৈরি করে পছন্দের পাওয়ার প্লান্ট ব্যবসায়ীদের বাড়তি সুযোগ করে দেন এবং কমিশন নেন।
এই ব্যক্তিকে ‘বিপু’ নাম দিয়ে পরিচয় দেন এবং সরাসরি ‘বিদ্যুৎ চোর’ বলে আখ্যায়িত করেন। তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধেও তীব্র ভাষায় দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন।
তিনি বলেন, এই ধরনের ব্যক্তিদের জন্য রাজনীতি এখন আর শ্রমিক, ছাত্র কিংবা তৃণমূলের রাজনীতি নয়—এটি চলে গেছে এসি কক্ষে, করপোরেট বোর্ডরুমে। এমনকি সমাজের অবক্ষয়িত দিকের সঙ্গে রাজনীতির মেলবন্ধনের অভিযোগও আনেন তিনি।
স্থানীয় রাজনীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, জনপ্রিয় নেতাদের বাদ দিয়ে বিপুর মতো লোকের ব্যক্তিগত সহকারীকে উপজেলা সাধারণ সম্পাদক বানানো হয়েছে।
নিজের অবস্থান নিয়ে তিনি জানান, তিনি সরকারি দলে থেকেও সমালোচনা করেছেন, অন্যায়কারীর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। তিনি স্পষ্ট করেন, যতদিন নেত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে থাকবেন, তিনি রাজনীতিতে থাকবেন। কিন্তু নেত্রী না থাকলে তিনি আর রাজনীতি করবেন না।
পোস্টের শেষাংশে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্য উদ্ধৃত করেন, যেখানে বলা হয়েছিল—“এই আওয়ামী লীগে শেখ হাসিনা ছাড়া সবাইকে কেনা যায়।” তিনি ব্যক্তিগতভাবে এই কথাকে শতভাগ সত্য বলে মনে করেন এবং তা বিশ্বাস করেন বলেও উল্লেখ করেন।
Leave a comment