ভারতীয় ক্রিকেটে এক যুগের দুই বড় নাম—বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা—কে ঘিরে এবার নতুন জল্পনা ছড়িয়েছে। টেস্ট ও আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি থেকে অবসরের পর এবার কি তাঁরা ওয়ানডেতেও বিদায়ের পথে? ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দৈনিক জাগরণ দাবি করেছে, এ বছরের অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়া সফরেই হয়তো শেষবারের মতো ওয়ানডে মাঠে দেখা যেতে পারে তাঁদের। সিরিজ শেষে অবসরের ঘোষণা দেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, বোর্ড এখন থেকেই তরুণদের সুযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। তাই অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার থাকলেও, বয়সের কারণেই কোহলি–রোহিতের জায়গা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়তে পারে। বর্তমানে রোহিতের বয়স ৩৮ এবং কোহলির ৩৬। ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে তাঁদের বয়স হবে যথাক্রমে ৪০ ও ৩৮—যা দীর্ঘ প্রতিযোগিতায় ফিটনেস ও পারফরম্যান্স বজায় রাখার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, যদি তাঁরা সত্যিই ২০২৭ সালের বিশ্বকাপ খেলতে চান, তাহলে এ বছর ডিসেম্বরের বিজয় হাজারে ট্রফিতে অংশ নিতে হবে। এর আগে যেমন ইংল্যান্ড সফরের আগে রঞ্জি ট্রফি খেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, এবারও ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফরম্যান্স যাচাই করেই বিশ্বকাপের দল গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে সেই ধাপে কোহলি ও রোহিত অংশ নেবেন কি না, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।
দুজনেই ভারতের হয়ে একাধিক মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। গত বছর জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর একসঙ্গে ছোট ফরম্যাটকে বিদায় জানান তাঁরা। চলতি বছরের মে মাসে বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফির পর টেস্ট ক্রিকেট থেকেও অবসর নেন। দুই ফরম্যাট থেকে অবসরের পর ওয়ানডেতে তাঁদের ভূমিকা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠছে।
ভারতের আসন্ন ওয়ানডে সূচিতে রয়েছে ব্যস্ত সময়সূচি। আগামী ১৯ অক্টোবর পার্থে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ শুরু হবে, বাকি ম্যাচগুলো হবে অ্যাডিলেড ও সিডনিতে। এরপর ডিসেম্বরের শুরুতে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। ২০২৬ সালেও রয়েছে একাধিক সিরিজ—নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং আবারও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। এই সময়ের মধ্যে নতুন খেলোয়াড়দের প্রস্তুত করতে চাইছে বিসিসিআই।
কোহলি ও রোহিতের বিদায়ের সম্ভাবনা ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। কেউ বলছেন, তরুণদের সুযোগ দেওয়ার এটাই সঠিক সময়, আবার অনেকে মনে করছেন তাঁদের অভিজ্ঞতা ছাড়া বড় টুর্নামেন্টে সাফল্য পাওয়া কঠিন হবে।
এখন প্রশ্ন, তাঁরা কি অস্ট্রেলিয়া সফরের পরই বিদায় বলবেন, নাকি ২০২৭ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত নিজেদের ধরে রাখবেন? সময়ই তার উত্তর দেবে, তবে যে–ভাবেই শেষ হোক, ভারতীয় ক্রিকেটে তাঁদের অবদান চিরকাল অম্লান থাকবে।
Leave a comment