যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ড নিয়ে মঙ্গলবার দেশটির প্রশাসন প্রায় ৮০ হাজার পৃষ্ঠার গোপন নথি প্রকাশ করেছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সোমবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান। এর আগে ১৯৬৩ সালে ঘটে যাওয়া বহুল আলোচিত ও রহস্যময় এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র প্রকাশের নির্দেশ দেন তিনি।
ওয়াশিংটনের দ্য কেনেডি সেন্টারে সোমবার এক পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। এ সময় তিনি বলেন, ‘এই নথির জন্য মানুষ দীর্ঘদিন অপেক্ষা করছে। এতে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য থাকতে পারে।’
দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর চলতি বছরের শুরুতে ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে সই করেন। ওই আদেশে তিনি কেনেডি, তাঁর ভাই রবার্ট কেনেডি এবং নাগরিক অধিকার আন্দোলনের নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যাকাণ্ড-সংক্রান্ত গোপন নথি প্রকাশের পরিকল্পনা উপস্থাপন করতে ফেডারেল সরকারকে নির্দেশ দেন।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই জানায়, কেনেডি হত্যাকাণ্ড নিয়ে তারা নতুন হাজারো নথি পেয়েছে। ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে তারা এসব নথির অনুসন্ধান শুরু করেছিল। অনুসন্ধানে প্রায় ২,৪০০টি নতুন তালিকাভুক্ত ও ডিজিটালাইজড নথি পাওয়া গেছে। এর আগে জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এসব নথির সম্পর্ক আছে বলে ধারণা করা হয়নি।
১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর টেক্সাসের ডালাসে জন এফ কেনেডিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপরই লি হার্ভি অসওয়াল্ড নামে এক ব্যক্তিকে হত্যাকাণ্ডের মূল সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে দুই দিন পর পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় অসওয়াল্ডকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর থেকেই হত্যাকাণ্ড নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব তৈরি হতে থাকে।
বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, কেনেডি হত্যাকাণ্ডের আনুষ্ঠানিক তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে জনগণের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সন্দেহ রয়েছে। অনেক ষড়যন্ত্র তত্ত্ব অনুযায়ী, এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে শুধুমাত্র অসওয়াল্ড নন, বরং আরও কেউ জড়িত থাকতে পারেন। কেউ কেউ মনে করেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন, কিউবা বা মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সম্পৃক্ততা থাকতে পারে।
প্রকাশিত নথিগুলোতে কী ধরনের নতুন তথ্য রয়েছে, তা বিশ্লেষণ করছে বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা ও ইতিহাসবিদেরা। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এসব নথি কেনেডি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে নতুন দিক উন্মোচন করতে পারে।
Leave a comment