গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলা ও নির্বিচার গণহত্যার প্রতিবাদে ৭ এপ্রিল ২০২৫ উত্তাল হয়ে উঠে কুমিল্লা নগরী। সোমবার সকাল থেকেই নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ, যাতে অংশ নেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সমাজকর্মী, রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
বিক্ষোভকারীদের হাতে দেখা গেছে নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড ও পোস্টার। কিছু প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল—‘সেভ ফিলিস্তিন’, ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘বয়কট ইসরায়েল’, ‘ইসরায়েলের কালো হাত—ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’। স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক।
বিক্ষোভে অংশ নিয়ে এক ফিলিস্তিনি নাগরিকের আবেগঘন বক্তব্য সবার হৃদয়ে নাড়া দেয়। তিনি বলেন, “আজ সারা বিশ্ব ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়িয়েছে এবং ইসরায়েলকে গাজার নিরীহ মানুষের উপর গণহত্যা বন্ধ করতে জোর করছে। আমি এখন আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি এমন এক সময়ে, যখন আমার দেশ ইসরায়েল হামলার অধীনে রয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এক বছর আগে আমার মাকে হারিয়েছি, আর ফিলিস্তিনের মানুষও কিছু না কিছু হারিয়েছে। তবুও আমরা এখনও আমাদের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে যাচ্ছি এবং কখনো হার মানবো না, কারণ এটি আমাদের পূর্ণ অধিকার। এটাই আমাদের পবিত্র ভূমি।”
তিনি আরও বলেন,“ইসরায়েল নামক কোনো রাষ্ট্রের অস্তিত্ব নেই। একে ফিলিস্তিন বলা হতো, এখনও ফিলিস্তিন বলা হয় এবং চিরকাল ফিলিস্তিনই বলা হবে। এটা প্রত্যেক মানব জাতির জন্য লজ্জার, তারা মুসলিম হোক, খ্রিস্টান হোক, হিন্দু হোক কিংবা অন্য কোনো ধর্মের অনুসারী—এই যুদ্ধ শুরু করেছে এমন একটি শত্রু, যারা মানবতার অর্থই বোঝে না। সকলের দৃষ্টি থাকা উচিত সেই ফিলিস্তিনি জনগণের দিকে, যারা গত দেড় বছর ধরে কষ্টে, অনাহারে ও মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছে।”
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের দৃঢ় কণ্ঠে উচ্চারিত স্লোগান ও সংহতির বার্তা স্পষ্টভাবে জানান দেয়—ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন আজ আর কেবল একটি অঞ্চল বা ধর্মীয় গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে বিশ্বমানবতার এক সম্মিলিত দাবি।
বিক্ষোভ শেষে একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল নগরীর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে এবং অংশগ্রহণকারীরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
Leave a comment