
কাশ্মীরের পেহেলগামে ২৩ এপ্রিলের ভয়াবহ হামলার পর নতুন করে আলোচনায় এসেছে এক রহস্যঘেরা সশস্ত্র গোষ্ঠী—দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (TRF)। এক দশকের মধ্যে এটি ছিল পর্যটকদের ওপর সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা। তৃণভূমিতে পর্যটকদের ওপর স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে ২৬ জনকে হত্যা করে বন্দুকধারীরা। আহত হয়েছেন আরও ডজনখানেক। হামলার পরপরই টিআরএফ টেলিগ্রাম চ্যানেলে দায় স্বীকার করে।
২০১৯ সালে ভারতের বিজেপি সরকার কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা বাতিল করার পরই টিআরএফ আত্মপ্রকাশ করে। শুরুতে এটি ‘ভার্চ্যুয়াল ফ্রন্ট’ হিসেবে পরিচিত হলেও দ্রুতই এ গোষ্ঠী বাস্তব হামলায় সক্রিয় হয়। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মনে করে, টিআরএফ মূলত পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার একটি শাখা বা মুখোশ মাত্র। যদিও পাকিস্তান এমন অভিযোগ অস্বীকার করে কাশ্মীরিদের ‘নৈতিক ও কূটনৈতিক’ সমর্থনের কথা বলে আসছে।
টিআরএফ তাদের ‘বিদেশি বসতি’ বিরোধী অবস্থানের কথা বললেও, বাস্তবে পর্যটকদের ওপর হামলা নতুন এক মাত্রা যোগ করেছে। এর মাধ্যমে তারা কাশ্মীরে স্বাভাবিকতা ফেরার সরকারি দাবি প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, পর্যটন খাতে আঘাত হানার মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি ও সরকারের কাশ্মীর নীতির সীমাবদ্ধতা নগ্ন হয়ে পড়েছে।
আতঙ্কে কাঁপছে কাশ্মীর। দোকানপাট বন্ধ, পর্যটকদের হুড়োহুড়ি করে ফিরে যাওয়া, বিমান ভাড়ার লাগামছাড়া বৃদ্ধি—সব মিলিয়ে কাশ্মীর আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। এমন হামলার পুনরাবৃত্তি কেবল নিরীহ প্রাণহানির ভয়ই বাড়ায় না, এটি উপত্যকার ভবিষ্যৎ রাজনীতির গতিপথকেও গভীর অনিশ্চয়তায় ঠেলে দেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজনৈতিক সমাধান ছাড়া এমন সহিংসতা বন্ধ হবে না। আর ‘স্বাভাবিকতা’র বয়ান যত বাড়ে, ততই উগ্রপন্থীরা সুযোগ খোঁজে দেখানোর জন্য—সবকিছু আসলে এখনো স্বাভাবিক হয়নি।
Leave a comment