হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী কল্পনা চাকমার অপহরণের ২৯ বছর পূর্তিতে আয়োজিত আলোচনা সভা শেষে ফেরার পথে কয়েকজন অংশগ্রহণকারীর ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। শুক্রবার পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে কমিটির পক্ষে এই নিন্দা জানান অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, চিকিৎসক হারুন-অর-রশীদ, সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা ও নারীনেত্রী সীমা দত্ত।
বিবৃতিতে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার সকালে রাঙামাটি শহরের আশিকা কনভেনশন হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে কল্পনা চাকমার অপহরণের প্রতিবাদে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি নূজিয়া হাসিন রাশা, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য মার্জিয়া প্রভা ও ইউল্যাবের শিক্ষক অলিউর রহমান সান।
আলোচনা শেষে চট্টগ্রামে ফেরার পথে তাঁদের ওপর একদল দুর্বৃত্ত হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন কমিটির নেতারা। একইসঙ্গে সভাস্থলে আসা বিভিন্ন এলাকার যাত্রীবাহী বাসের বাঙালি চালকদের তুলে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগও উত্থাপন করা হয়। এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে।
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি বিবৃতিতে উল্লেখ করে, ১৯৯৬ সালের ১১ জুন কল্পনা চাকমাকে নিজ বাড়ি থেকে অপহরণের পর এত বছরের মধ্যেও তাঁর কোনো খোঁজ মেলেনি এবং মামলার বিচারকাজ এগোয়নি। এর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের উদাসীনতা ও মানবাধিকারবিরোধী অবস্থান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এ ধরনের হামলা ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে বড় বাধা।
সম্প্রতি ঢাকায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর একটি মিছিলে হামলার ঘটনাতেও বিচার না হওয়ায় গভীর উদ্বেগ জানায় কমিটি। তারা মনে করে, রাষ্ট্রের নীরবতা ও কার্যকর পদক্ষেপের অভাব অগণতান্ত্রিক শক্তিকে উৎসাহিত করছে। বারবার নারী, আদিবাসী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপর সংঘবদ্ধ আক্রমণ চালিয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশকে বিপন্ন করা হচ্ছে।
সব খুন, গুম ও অপহরণের সুষ্ঠু বিচার দাবি করে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি বিবৃতির শেষাংশে দেশের সব জনগোষ্ঠীর নাগরিক অধিকার রক্ষায় সক্রিয়ভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানায়।
Leave a comment