কবর থেকে লাশ তোলা, ময়নাতদন্ত করানো এবং সিআইডি দিয়ে হত্যা মামলার ‘সঠিক তদন্ত’ করিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এক নারীর কাছ থেকে ২ লাখ ৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তিন প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। বৃহস্পতিবার রাতে বগুড়ায় সিআইডি জেলা কার্যালয়ে কৌশলে ডেকে এনে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন বগুড়ার গাবতলী থানার কালাইহাটা সরকারপাড়ার বাসিন্দা মো. লিখন মিয়া (৩৩), তাঁর ছোট দুই ভাই মো. রানা মিয়া (৩০) ও মো. সুমন মিয়া (২৮)।
সিআইডির বগুড়া জেলার বিশেষ পুলিশ সুপার মোতাহার হোসেন জানান, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে গাবতলীর বাসিন্দা মাসুদ ফকিরকে হত্যা করা হয়। তাঁর মেয়ে তাসলিমা আক্তার বাদী হয়ে থানায় মামলা করলেও স্থানীয় পুলিশ আসামিদের বাদ দিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়। এতে আপত্তি জানিয়ে তাসলিমা আদালতে নারাজি আবেদন করলে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি।
সিআইডি তদন্ত শুরু করে এবং লাশ উত্তোলনের জন্য আদালতে আবেদন করে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যেই প্রতারক চক্রটি সক্রিয় হয়। তারা তাসলিমাকে জানায়, লাশ তোলা, ময়নাতদন্ত এবং মামলার ‘সঠিক তদন্ত’ করাতে তাদের ভালো যোগাযোগ আছে বিচারক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে। এই কাজে সাহায্য করতে পারবে—এমন বিশ্বাস দেখিয়ে ধাপে ধাপে তাসলিমার কাছ থেকে মোট ২ লাখ ৫ হাজার টাকা নেয় তারা।
গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি বিক্রি করে এবং জমি বন্ধক দিয়ে টাকা জোগাড় করে দেন তাসলিমা। কিন্তু এক পর্যায়ে প্রতারকেরা আরও টাকা দাবি করলে বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হয়। বুধবার তাসলিমা সিআইডির কাছে অভিযোগ করলে রাতেই অভিযুক্ত তিন ভাইকে ফাঁদে ফেলে ডেকে আনা হয় এবং গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা প্রতারণার কথা স্বীকার করেন। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার করা পুরো টাকা তাসলিমার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সিআইডির পক্ষ থেকে বগুড়া সদর থানায় একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, চক্রের আরও সদস্যদের শনাক্ত করতে তদন্ত চলছে।
Leave a comment