খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামানকে নিয়ে নতুন অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি এবং দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিশেষ করে, তার মেয়াদে ১০ বছরে তিন শতাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়, যার মধ্যে এক মাসে ১২৪ জনের নিয়োগ ছিল। এসব নিয়োগে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তদন্তেও প্রমাণ মিললেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব নিয়োগ এবং পদোন্নতির বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে। বুধবার, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে চিঠি দিয়ে এসব নিয়োগের তালিকা, নিয়োগ কমিটির কার্যবিবরণীসহ বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে। এর আগে, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মাহমুদ হোসেনের সময়ের নিয়োগেও অনিয়মের অনুসন্ধান শুরু করেছিল দুদক।
ফায়েক উজ্জামান, যিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক ছিলেন, ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। তার মেয়াদে নিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন বিতর্ক সৃষ্টি হয়, যেমন- অনেক প্রার্থীর পরিবর্তে তার ছাত্রকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, এবং বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী তার নিজ গ্রাম গোপালগঞ্জ থেকে নিয়োগ পেয়েছেন।
দুদক বর্তমানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ কর্মকর্তার নিয়োগ এবং পদোন্নতির নথি চেয়েছে। এসব কর্মকর্তার পদোন্নতি নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। দুদক অনুসন্ধানী টিম প্রধান মো. আবদুল ওয়াদুদ জানিয়েছেন, ৫ মার্চের মধ্যে নথি পাওয়া গেলে পুরোদমে অনুসন্ধান কাজ শুরু হবে।
এছাড়া, ফায়েক উজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে, বিশেষ করে একাডেমিক ভবন, আবাসিক হল এবং অন্যান্য প্রকল্পে। ২০১৯ সালে, ৪৫ জন শিক্ষক একাডেমিক ভবন নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ জানান এবং বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখিয়ে ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে তদন্তের সুপারিশ করা হয়। এখন পর্যন্ত ফায়েক উজ্জামানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি, তবে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।
Leave a comment