বাংলা চলচ্চিত্র ও নাটকের কিংবদন্তি অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান ২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পাঁচ দশকের দীর্ঘ অভিনয়জীবনে অসংখ্য দর্শকপ্রিয় চরিত্রে অভিনয় করে তিনি পেয়েছিলেন অগণিত ভক্তের ভালোবাসা। তাঁর মৃত্যুতে বাংলা সংস্কৃতি ও বিনোদন জগত এক উজ্জ্বল নক্ষত্রকে হারায়।
এটিএম শামসুজ্জামান ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীতে জন্মগ্রহণ করেন। চলচ্চিত্রে তাঁর ক্যারিয়ার শুরু হয় ষাটের দশকে। প্রথমদিকে চিত্রনাট্যকার হিসেবে কাজ করলেও পরবর্তীতে অভিনয়ে নাম লেখান। ১৯৭৬ সালে আমজাদ হোসেন পরিচালিত নয়নমণি সিনেমায় খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করে দারুণ জনপ্রিয়তা পান।
এটিএম শামসুজ্জামান ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম শক্তিশালী অভিনেতা, যিনি কমেডি ও খল চরিত্রে সমান দক্ষতা দেখিয়েছেন। গোলাপী এখন ট্রেনে, দায়ী কে?, চুড়িওয়ালা, মাটির ঘর, অপেক্ষা, লাল শাড়িসহ অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। তাঁর অভিব্যক্তি, সংলাপের ভঙ্গি ও চরিত্রের গভীরতা তাঁকে অনন্য করে তুলেছিল।
দীর্ঘ অভিনয়জীবনে তিনি পেয়েছেন বহু পুরস্কার ও স্বীকৃতি। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে। এছাড়াও পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন।
জীবনের শেষ দিকে এটিএম শামসুজ্জামান বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। ২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি, ঢাকার নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর পরেও তাঁর অভিনীত চরিত্রগুলো বাংলা চলচ্চিত্রপ্রেমীদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে।
এটিএম শামসুজ্জামান শুধু একজন অভিনেতা নন, বরং বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাঁর অবদান বাংলা বিনোদন জগতে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
Leave a comment