একুশে পদক ২০২৫ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভাষা আন্দোলনের অসামান্য প্রভাবের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, “আজকের তরুণ প্রজন্ম অতীতের যেকোনো প্রজন্মের চেয়ে বেশি শক্তিশালী, উদ্যমী এবং সৃজনশীল।” ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস পুরস্কৃতদের হাতে পদক তুলে দেন।
এ বছর একুশে পদক ১৭ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে দেওয়া হয়েছে। পদকপ্রাপ্তরা ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি পদক, ৪ লাখ টাকা এবং একটি সম্মাননাপত্র পেয়েছেন।
ড. ইউনূস তরুণদের আত্মবিশ্বাসের প্রশংসা করে বলেন, তারা একটি নতুন বাংলাদেশই নয়, বরং নতুন পৃথিবী সৃষ্টির জন্যও নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। তাদের লক্ষ্য হলো একটি এমন সভ্যতা প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে পৃথিবীর সব সম্পদের ওপর প্রতিটি মানুষের সমান অধিকার থাকবে এবং পৃথিবীর অস্তিত্ব কোনোভাবেই বিঘ্নিত হবে না।
তিনি ভাষা আন্দোলনের শহীদদের গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের আত্মপরিচয়ের অবিনাশী স্মারক। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে ছাত্রসমাজের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল। এ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধিকার চেতনার এক নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছিল।
এছাড়া, ড. ইউনূস গত বছরের ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানকে একটি নতুন বাংলাদেশের উন্মেষ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন, এ বিজয়ের মধ্য দিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের সুযোগ এসেছে।
একুশে পদকপ্রাপ্ত সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা জাতির পথপ্রদর্শক, এবং জাতি আপনাদের অবদানে উদ্বুদ্ধ হয়ে ক্রমাগত উন্নতির পথে এগিয়ে যাবে।
এই বছরের একুশে পদক প্রাপ্তরা হলেন: শিল্পকলায় আজিজুর রহমান (মরণোত্তর), সংগীতে ওস্তাদ নীরদ বরণ বড়ুয়া (মরণোত্তর), ফেরদৌস আরা, আলোকচিত্রে নাসির আলী মামুন, চিত্রকলায় রোকেয়া সুলতানা, সাংবাদিকতায় মাহ্ফুজ উল্লাহ (মরণোত্তর), গবেষণায় মঈদুল হাসান, শিক্ষায় ড. নিয়াজ জামান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মেহদী হাসান খান (দলনেতা), রিফাত নবী (দলগত), মো. তানবিন ইসলাম সিয়াম (দলগত), শাবাব মুস্তাফা (দলগত), সমাজসেবায় মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী (মরণোত্তর), ভাষা ও সাহিত্যে হেলাল হাফিজ (মরণোত্তর), শহীদুল জহির (মো. শহিদুল হক) (মরণোত্তর), সাংবাদিকতা ও মানবাধিকারে মাহমুদুর রহমান, সংস্কৃতি ও শিক্ষায় ড. শহিদুল আলম এবং ক্রীড়ায় বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল।
Leave a comment