ক্ষমতার অপব্যবহার, তদবির বাণিজ্য ও শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা এবং জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আবেদন করেছে। শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দুদকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে সরকারি পদ ব্যবহার করে প্রভাব খাটিয়ে তদবির ও টেন্ডার–বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার তাঁকে দুদকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁর ব্যাংক হিসাব, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি এবং আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক নিয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে বলে জানান দুদকের আরেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। অভিযোগের সত্যতা মিললে পরবর্তী ধাপে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
উল্লেখ্য, মোয়াজ্জেম হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন এবং সাবেক ছাত্রনেতা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট সজীব ভুঁইয়া নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন। এরপর ১৪ আগস্ট তিনি মোয়াজ্জেমকে নিজের এপিএস হিসেবে নিয়োগ দেন।
তবে দায়িত্ব গ্রহণের কিছুদিন পর থেকেই মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে তদবির–বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ আসতে থাকে। এসব অভিযোগের জেরে গত ২১ এপ্রিল তাঁকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। যদিও পরে সংশোধিত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, তাঁর পদত্যাগপত্র গৃহীত হওয়ায় অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।
এ বিষয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নিজেও এক বিবৃতিতে বলেন, তিনি নিজে দুদককে সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে তদন্তের অনুরোধ করেছেন।
দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মোয়াজ্জেম যাতে তদন্ত চলাকালে দেশত্যাগ না করতে পারেন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে আর কোনো প্রক্রিয়ায় সুবিধা না নিতে পারেন, সে লক্ষ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে।
দুদকের কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থেই এমন পদক্ষেপ জরুরি। বিষয়টি এখন সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা ও প্রশাসনিক সংস্থাগুলোর বিবেচনার ওপর নির্ভর করছে।
Leave a comment