ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, তাঁর দেশ ইসরায়েলের যেকোনো সামরিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। আল–জাজিরাকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল যদি যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়, আমরা তা প্রতিহত করব। আমাদের সশস্ত্র বাহিনী ইসরায়েলের গভীরে আবারও আঘাত হানার সক্ষমতা রাখে।’ ইরান-ইসরায়েল ১২ দিনের সাম্প্রতিক সংঘাত ও যুদ্ধবিরতির প্রেক্ষাপটে পেজেশকিয়ানের এই মন্তব্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
তিনি বলেন, এই যুদ্ধবিরতিকে ইরান টেকসই বলে মনে করছে না এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে তাঁর আশাবাদ একেবারেই সীমিত। তাঁর মতে, ইসরায়েলের হঠাৎ হামলায় ইরান যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তেমনি পাল্টা আঘাতে তেহরানও ইসরায়েলকে মারাত্মকভাবে ক্ষত দিয়েছে—যদিও তেল আবিব এই ক্ষয়ক্ষতি লুকিয়ে রেখেছে। ইরানি প্রেসিডেন্ট জানান, তাদের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের হত্যা ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর ইসরায়েলের আক্রমণ দেশটির নেতৃত্ব কাঠামো ধ্বংসের একটি অপচেষ্টা ছিল, কিন্তু সেটি ব্যর্থ হয়েছে।
পাশাপাশি তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ও পারমাণবিক সক্ষমতা উন্নয়নের প্রকল্প কোনোভাবেই থামবে না। তিনি বলেন, এই কর্মসূচি আন্তর্জাতিক আইনের সীমারেখার মধ্যেই পরিচালিত হচ্ছে এবং এটি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যেই চালানো হচ্ছে। তাঁর ভাষায়, ‘আমরা পারমাণবিক অস্ত্র চাই না, কারণ এটি আমাদের রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও মানবিক অবস্থানের বিরুদ্ধেই যায়।’
মাসুদ পেজেশকিয়ান সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের জবাবে বলেন, ‘ট্রাম্প বলেছেন, আমাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শেষ হয়ে গেছে। এটি একটি ভুল ধারণা।’ তিনি জানান, ইরান কূটনীতিকে সমর্থন করে, তবে সেটা হতে হবে সমমর্যাদার ভিত্তিতে—জোরজবরদস্তি মেনে নেওয়া হবে না।
সাম্প্রতিক ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনার পটভূমিতে এই বক্তব্যকে তেহরানের কূটনৈতিক হুঁশিয়ারি হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরান সরাসরি সামরিক প্রস্তুতির বার্তা দিয়ে শুধু মধ্যপ্রাচ্যে নয়, পুরো বিশ্ব রাজনীতির দিকেই নতুন করে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা
Leave a comment