মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের লাগাতার বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৯৩ জন ফিলিস্তিনি। এতে চলমান সহিংসতায় মোট প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৮ হাজার ৪৭৯ জনে।
গাজার উত্তরাঞ্চলের ‘শাতি শরণার্থী শিবিরে’ এদিন ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে নিহত হন ২৩ জন, আহত হয়েছেন আরো অনেকে। একই দিন দক্ষিণ গাজায় বিতর্কিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) পরিচালিত একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে বোমা হামলায় নিহত হন দুই নারী এবং আহত হন অন্তত ৩০ জন ।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, মে মাসের শেষ দিক থেকে জিএইচএফ-এর কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে অন্তত ৮৭৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন ।
ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স বলছে, মঙ্গলবার ভোর থেকে শুরু হওয়া হামলায় এখন পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে ১৮ জনের মৃতদেহ এবং আহত হয়েছেন ডজনখানেক মানুষ। গাজার উত্তরাঞ্চলে হামলার বেশিরভাগ ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে, গাজার ১৬টি এলাকার বাসিন্দাদের সরে যেতে বাধ্য করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী, যার মধ্যে জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরও রয়েছে। ফলে আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছেন হাজারো মানুষ। আল জাজিরার সাংবাদিক মোয়াত আল-কাহলুত জানিয়েছেন, অনেকেই গাড়ি, এমনকি গাধার গাড়ি ব্যবহার করে গন্তব্যহীনভাবে ছুটছেন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, গাজায় শিশুদের মধ্যে উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে ‘অপুষ্টি’ । সংস্থাটির প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, ২০২৪ সাল থেকে পরীক্ষিত প্রতি ১০ শিশুর একজন অপুষ্টিতে ভুগছে।
এই মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক বৈঠকে মিলিত হন। সেখানে ইসরায়েলের সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তি লঙ্ঘনের প্রতিক্রিয়ায় ১০টি সম্ভাব্য ব্যবস্থা প্রস্তাব করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে চুক্তি স্থগিত, বাণিজ্য সীমাবদ্ধতা, অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা, ইসরায়েলি মন্ত্রীদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা এবং ভিসামুক্ত ভ্রমণ সুবিধা বাতিলের প্রস্তাব।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩৫৫ জন আহত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৩টি মৃতদেহ ও ২৭৮ জন আহত ব্যক্তি পৌঁছেছে হাসপাতালে।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি
Leave a comment