ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বোমা হামলার পরও তেহরানের কাছে অস্ত্র তৈরির উপযোগী ইউরেনিয়াম রয়ে গেছে বলে আশঙ্কা করছে ইসরায়েল। দেশটির এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, এসব ইউরেনিয়াম এখনো ইরানি বিজ্ঞানীদের নাগালে রয়েছে এবং তা পারমাণবিক বোমা তৈরিতে ব্যবহৃত হতে পারে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও প্রতিরক্ষা দপ্তর দাবি করেছে, ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে। তবে তারা এ দাবির সপক্ষে নির্দিষ্ট তথ্য দেয়নি। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি অনুযায়ী, ওই হামলায় ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের বাংকার ধ্বংসকারী বোমা ব্যবহার করা হয়।
ইসরায়েলের হিসাব বলছে, ইরানের ১৮ হাজার সেন্ট্রিফিউজের অধিকাংশ ধ্বংস হলেও ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের একটি অংশ ধ্বংস হয়নি। সেগুলো বিশেষ পাত্রে সংরক্ষিত ছিল। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ওই ইউরেনিয়াম সংগ্রহের চেষ্টা হলে তারা আবার হামলা চালাবে।
ইসরায়েল মনে করে, হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ নিহত হওয়ার পর ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির তৎপরতা বাড়িয়েছে। এ–সংক্রান্ত তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও ভাগাভাগি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাসচিব রাফায়েল গ্রোসি জানিয়েছেন, ইরান আগেই ইউরেনিয়ামের একটি অংশ সরিয়ে ফেলেছিল। তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এ দাবি মানতে নারাজ।
গত ১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে উভয় পক্ষ একাধিক হামলা চালিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়েছে, যা মার্কিন ইতিহাসে প্রথম। পাল্টা জবাবে ইরান কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হামলাকে ‘দুর্বল জবাব’ বলে অভিহিত করেন এবং শান্তি আলোচনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ইরান এখন আঞ্চলিক শান্তির পথে এগোবে এবং তিনি ইসরায়েলকেও সেই পথ অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছেন।
চলতি সপ্তাহেই ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে নতুন করে পারমাণবিক আলোচনা শুরু হচ্ছে এবং এ বিষয়ে সময়সূচি নির্ধারিত হয়েছে।
তথ্যসূত্র: মিডল ইস্ট আই
Leave a comment