ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে টানা ১২ দিনের সংঘাতের পর। সংঘাতের আপাত ইতি ঘটলেও, ইরানের হামলায় হওয়া ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইসরায়েলের। মূলত ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় ইসরায়েলের নাগরিকরা ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন।
আর এই ক্ষতিপূরণ দাবির সংখ্যা প্রায় ৩৯ হাজারে পৌঁছে গেছে। বার্তাসংস্থা আনাদোলু’র এক প্রতিবেদনে বুধবার (২৫ জুন) এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে শুরু হওয়া সংঘাত চলল একটানা ১২ দিন। প্রথমে ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল , অভিযোগ তোলে যে ইরান নাকি পারমাণবিক বোমা তৈরির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
জবাবে ইরানও একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় ইসরায়েলে, যার ফলে দেশটির বিভিন্ন শহরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করে এবং ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২৪ জুন গভীর রাতে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন।
সংঘাত শেষে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিয়ে ইসরায়েলের ভেতরে তৈরি হয়েছে চাপ। ইসরায়েলের ট্যাক্স কর্তৃপক্ষের অধীনে পরিচালিত ক্ষতিপূরণ তহবিলে এখন পর্যন্ত জমা পড়েছে মোট ৩৮ হাজার ৭০০ দাবি । এসব দাবির মধ্যে কেবল ভবনের ক্ষতির জন্য জমা পড়েছে ৩০ হাজার ৮০৯ আবেদন, যানবাহনের ক্ষতির জন্য ৩ হাজার ৭১৩ এবং ৪ হাজার ৮৫ দাবি করা হয়েছে যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য সামগ্রীর ক্ষতির জন্য।
ইসরায়েলের জনপ্রিয় সংবাদপত্র ইয়েদিয়থ আহারোনোথ জানিয়েছে, বাস্তবে ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে। কারণ অনেক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এখনো দাবি জানায়নি। বিশেষ করে বিভিন্ন ছোট শহর ও গ্রামাঞ্চলে ক্ষয়ক্ষতির পরিসংখ্যান এখনো সংগ্রহ করা হয়নি।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের আল্ট্রা-অর্থোডক্স সম্প্রদায়ভিত্তিক ওয়েবসাইট বেহাদরেই হারেদিম জানিয়েছে, কেবল তেল আবিব শহরেই সর্বোচ্চ ২৪ হাজার ৯৩২টি ক্ষতিপূরণ দাবি জমা পড়েছে। এরপর রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের শহর আশকেলন, সেখান থেকে আরও ১০ হাজার ৭৯৩টি দাবি এসেছে।
তবে এই বিপুল পরিমাণ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ঠিক কী পরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে হতে পারে সে বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনো আর্থিক মূল্যায়ন প্রকাশ করা হয়নি।
Leave a comment