ইরাকের একটি পানি পরিশোধন কেন্দ্রে ক্লোরিন গ্যাস লিকের ঘটনায় ৬০০ জনেরও বেশি শিয়া তীর্থযাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। শ্বাসকষ্ট ও শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যায় আক্রান্ত এসব তীর্থযাত্রীকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ইরাকি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তারা সবাই সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।
রোববার (১০ আগস্ট) ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি ইরাকি সরকারি সূত্রের বরাতে জানায়, নাজাফ ও কারবালার মধ্যবর্তী একটি এলাকায় শনিবার রাতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনাস্থলটি একটি শিয়া অধ্যুষিত অঞ্চল, যেখানে প্রতিবছর লাখ লাখ শিয়া তীর্থযাত্রী কারবালার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।
প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে শিয়া মুসলিমরা ইমাম হোসেনের শাহাদাতের ৪০ দিনের শোকপালনের জন্য কারবালায় যান। কারবালায় অবস্থিত ইমাম হোসেন ও তাঁর ভাই আব্বাসের মাজার শিয়া মুসলিমদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় কেন্দ্র। এই সময় নাজাফ থেকে কারবালার সড়কজুড়ে লাখো মানুষের পদযাত্রা দেখা যায়।
ইরাকের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, কারবালার পথে একটি পানি পরিশোধন কেন্দ্র থেকে হঠাৎ ক্লোরিন গ্যাস লিক হয়। এতে নাজাফ-কারবালা সড়ক দিয়ে যাওয়া তীর্থযাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গ্যাসের সংস্পর্শে এসে অনেকেই মাথা ঘোরা, চোখ জ্বালা, কাশি এবং শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মোট ৬২১ জন আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকদের তৎপরতায় কেউ গুরুতর অবস্থায় না থাকায় সবাই সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরতে পেরেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্লোরিন গ্যাস মানবদেহের শ্বাসতন্ত্রে গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে। উচ্চমাত্রায় গ্যাস শ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলে ফুসফুসে প্রদাহ, শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং গুরুতর ক্ষেত্রে মৃত্যুও ঘটতে পারে। যদিও এই ঘটনায় প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি, তবুও নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে।
ইরাকি কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। পানি পরিশোধন কেন্দ্রটির কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে এবং আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে পানি শোধনাগারগুলোতে নিরাপত্তা প্রটোকল শক্তিশালী করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Leave a comment