Home জাতীয় আহতদের মনোবল বাড়াতে হাসপাতালে গেলেন লুৎফুজ্জামান বাবর
জাতীয়

আহতদের মনোবল বাড়াতে হাসপাতালে গেলেন লুৎফুজ্জামান বাবর

Share
Share

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের মনোবল চাঙ্গা করতে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট এবং জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) পরিদর্শন করেছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। শনিবার রাত সাড়ে আটটার পর তিনি হাসপাতালে গিয়ে আহতদের খোঁজখবর নেন এবং তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত ব্যক্তিরা আন্দোলনের সময় তাঁদের ওপর চালানো দমন-পীড়নের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বাবরের সঙ্গে শেয়ার করেন। তাঁরা জানান, কিভাবে পুলিশের গুলি ও হামলায় তাঁরা গুরুতর জখম হয়েছেন, কীভাবে চোখ হারিয়েছেন বা অঙ্গহানি ঘটেছে। বাবর তাঁদের সাহস জোগান এবং বলেন, ‘আপনারা মনোবল হারাবেন না, আমি ও আমার দল আপনাদের পাশে আছি। দেশের মানুষের রক্ত বৃথা যাবে না।’
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন মিজানুর রহমান তাঁর করুণ পরিস্থিতির কথা জানিয়ে বলেন, ‘আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে আমার একটি চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। আমি আর কখনো স্বাভাবিকভাবে দেখতে পারব না।’ শুধু মিজানুর নন, তাঁর মতো আরও কয়েকজন কিশোর চোখে গুলিবিদ্ধ হয়ে একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের একজন বাবরকে বলেন, ‘আমরা জীবন হাতে নিয়ে স্বৈরাচারী সরকারকে হটাতে লড়াই করেছি। আমি চোখ হারিয়েছি, কিন্তু দেশের ভবিষ্যতের জন্য এ লড়াই করেছি।’
বাবরের উপস্থিতিতে অনেক আহত ব্যক্তি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তাঁদের কয়েকজন কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাঁদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে বাবর বলেন, ‘আপনারা শুধু নিজের জন্য লড়েননি, পুরো দেশের মানুষের জন্য লড়েছেন। আপনাদের এই আত্মত্যাগের যথাযথ মর্যাদা দিতে আমরা বদ্ধপরিকর।’
আহতদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাবর বলেন, ‘এই সাহসী যোদ্ধারা তাঁদের দৃষ্টিশক্তি ও অঙ্গ হারিয়েছেন, যা অত্যন্ত মর্মান্তিক। আমরা তাঁদের জন্য যতটুকু সম্ভব করতে চাই, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য কাজ করব।’
তিনি হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গেও কথা বলেন এবং আহতদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান। এ সময় তাঁর পক্ষ থেকে আহতদের ফল ও অন্যান্য উপহার দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ১৭ বছর কারাভোগের পর গত ১৬ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান লুৎফুজ্জামান বাবর। তিনি ১৯৯১ সালে নেত্রকোনা-৪ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে বিএনপির টিকিটে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন এবং বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
তাঁর এই হাসপাতাল পরিদর্শন বিএনপির রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা। বাবরের প্রত্যাবর্তনের পর এই প্রথম তিনি সরাসরি আহতদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন, যা আগামী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

বরিশালে শিশু ধর্ষণের আসামি গণপিটুনিতে নিহত

বরিশালে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত এক যুবক গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন। শনিবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় বরিশাল নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের জিয়ানগরে স্থানীয় জনতা তাকে...

রাখাইনে মানবিক সহায়তায় করিডোর চায় জাতিসংঘ, বাংলাদেশের সহযোগিতা প্রয়োজন

মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সংঘাতের মধ্যে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা পাঠাতে বাংলাদেশকে করিডোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। শনিবার (১৫ মার্চ) ঢাকায় এক যৌথ সংবাদ ব্রিফিংয়ে...

Related Articles

ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে ইলিয়াসপত্নী লুনা

সিলেট, ১১ মার্চ: সিলেটের দৌলতপুর ইউনিয়নের হাসনাজি গ্রামের প্রবাসী বিএনপির নেতৃবৃন্দের উদ্যোগ...

ব্রাজিলে তিন শিংওয়ালা গরু, বিস্মিত সবাই

বিশ্বে আশ্চর্যের কোনো কমতি নেই। কখনো শোনা যায় দুই মাথার মানুষ, কখনো...

শান্তিনগরে চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার ৪ জন, দুই দিনের রিমান্ড

রাজধানীর শান্তিনগর বাজারে চাঁদাবাজির সময় হাতেনাতে ধরা পড়া চার যুবককে দুই দিনের...

বেবিচকের আলাদা নিরাপত্তা বাহিনী গঠনের খবর ‘অপপ্রচার’

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) আলাদা নিরাপত্তা বাহিনী গঠনের যে খবর...