পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসেন হত্যাকাণ্ডে পুলিশের দেওয়া তথ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিযুক্ত ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষার পরিবার।
জোবায়েদ বর্ষাকে বাসায় গিয়ে পড়াতেন। বর্ষার মা আনিকা রহমান ও বাবা মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন,“বর্ষা যদি স্যারকে খুন করাতো, তাহলে নিজের বাড়ির ভেতরেই করাতো কেন? ওদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক থাকলে মাহিরের মাধ্যমে খুন করাতো কেন, আর মাহিরের নাম পুলিশকে শুরুতেই বলতো কেন?”
গত ১৯ অক্টোবর জোবায়েদ ছাত্রী বর্ষার বাসায় গিয়ে খুন হন। এ ঘটনায় পুলিশ বর্ষা, তার প্রেমিক মাহির রহমান ও মাহিরের বন্ধু আলাইনকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের দাবি, ঘটনাটি ছিল এক “ত্রিভুজ প্রেমের খুন”। তবে বর্ষার মা বলেন,“আমার মেয়ে সারাদিন বাসায় ছিল, আমি নিজে ওকে ভাত খাওয়াচ্ছিলাম। খুনের সময় সে নিচে ছিল না। পরে চিৎকার শুনে নিচে গিয়ে দেখে স্যার রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন।”
পুলিশ জানিয়েছিল, বর্ষা গহনা বিক্রি করে মাহিরকে গাড়ি কিনে দিয়েছে। এ বিষয়ে আনিকা রহমান বলেন,“আমার গহনা আমি ঘরে রাখি না। বর্ষা যদি এমন করত, আমি জানতাম না?”
বর্ষার মা বলেন,“তারা ছোটবেলা থেকে প্রতিবেশী। তখনকার বন্ধুত্বকে প্রেম বলা যায় না। সম্পর্ক থাকলেও সেটা এক-দেড় বছরের বেশি নয়।” তিনি আরও জানান, মাহির ছিল “উচ্ছৃঙ্খল” ছেলে, তাই মেয়েকে তার সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছিল।
পুলিশের দাবি, জোবায়েদ ও বর্ষার মধ্যেও তিন মাসের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ বিষয়ে বর্ষার মা বলেন,“জোবায়েদ স্যার বর্ষার আইডল ছিল, তার টিচার ছিল, প্রেমের কিছু না। আমরাও শোকাহত, কারণ আমাদের বাড়িতেই ঘটনাটা ঘটেছে।”
বর্ষার ফোনে লোকেশন শেয়ারিং নিয়ে পুলিশের দাবি প্রসঙ্গে আনিকা রহমান বলেন,“বর্ষা নিয়মিতই স্যারকে ফোন দিত, কখন আসবেন জানতে। ওই দিন স্যার নিজেই লোকেশন শেয়ার করেন। বর্ষা কারও সঙ্গে তা শেয়ার করেনি—ফোন চেক করলেই বোঝা যাবে।” তিনি আরও বলেন,“মাহির জানত জোবায়েদ বর্ষাকে পড়ায়। সেটি পছন্দ করত না। হয়তো সে ক্ষোভ থেকেই এই কাজ করেছে।”
বর্ষার বাবা বলেন,“পুলিশ সত্যটা বলেনি। আমাদের মেয়েকে হয়তো ভয় দেখিয়ে বা চাপ দিয়ে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে। আমরা চাই, জোবায়েদের খুনের বিচার হোক—কিন্তু আমার মেয়েকে যেন ফাঁসানো না হয়।”
Leave a comment