পাবনার আটঘরিয়ায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘর্ষ ও উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, এখন থেকে আটঘরিয়ার কোনো মসজিদে জামায়াতপন্থী কোনো ইমাম বা মুয়াজ্জিন আজান দিতে বা নামাজ পড়াতে পারবেন না।
শনিবার সকালে আটঘরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষে আহত নেতা-কর্মীদের দেখতে গিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন। ওই সময় তাঁর দেওয়া বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
১১ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে হাবিবুর রহমান বলেন, “দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, আমি তার সঙ্গে একমত। তবে আমি আজ স্পষ্ট করে বলছি—আর যেখানেই হোক, আটঘরিয়ায় জামায়াতের কোনো মুয়াজ্জিন আজান দিতে পারবে না, কোনো ইমাম নামাজ পড়াতে পারবে না। আগামী জুমায় জনগণ প্রতিবাদ জানাবে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, দেবোত্তর বাজার মসজিদে জামায়াতপন্থীরা তালা মেরে চলে গেছে। এ কারণে শুক্রবার জুমার নামাজ মসজিদের বাইরে মাঠে পড়তে বাধ্য হয়েছেন মুসল্লিরা। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে মসজিদ খোলা হয় বলে জানান তিনি।
গত বৃহস্পতিবার দেবোত্তর ডিগ্রি কলেজ পরিচালনা পরিষদের অভিভাবক সদস্যপদ নিয়ে বিরোধের জেরে বিএনপি ও জামায়াতপন্থী নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে দুই পক্ষই প্রতিবাদে নামে, একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে।
শুক্রবার সকালে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করেন, বিএনপি কর্মীরা পবিত্র কোরআন শরিফ পুড়িয়েছে। এ অভিযোগকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে আখ্যা দিয়ে শনিবার পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানান হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, “কত বড় হায়েনা হলে নিজেরা কোরআন পুড়িয়ে তা নিয়ে মিছিল করে। আমাদের কর্মীরা কখনোই কোরআন পোড়াতে পারে না।”
তিনি আরও বলেন, “জামায়াত-শিবির স্বাধীনতাবিরোধী, এরা রগকাটা গ্রুপ, শহীদ মিনারে বা জাতীয় স্মৃতিসৌধে যায় না। তারা ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না। এখন এরা নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।”
বিএনপির এই নেতা সাধারণ মানুষকে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান এবং তাঁদের বিচার দাবি করেন। তাঁর বক্তব্যের পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তৎপর রয়েছে।
Leave a comment