আজ (২৯ মে) বাংলাদেশের অভিনয় জগতের কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরিদীর ৭২তম জন্মদিন । ঢাকার নারিন্দায় ১৯৫২ সালের এই দিনে জন্ম গ্রহণ করেন হুমায়ুন ফরিদী। ঢাকায় জন্ম হলেও তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে ঢাকায় বাইরে।
বাবার চাকরির সুবাদে ঘুরতে হয়েছে মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, কিশোরগঞ্জ, মাদারীপুরসহ আরও অনেক জেলায়। যে কারণে তার প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের পড়াশোনাও হয়েছে বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন স্কুলে।
১৯৭০ সালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি শেষ করেন তিনি । স্বাধীনতার পর অর্থনীতি নিয়ে ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে অনার্স সম্পন্ন করেন।
তবে ছেলেবেলা থেকেই অভিনয়ে ঝোঁক ছিল ফরিদীর । তাই অর্থনীতিতে এতো ভালো ফলাফল করেও অভিনয়কে পেশা হিসেবে বেছে নেন । আশির দশকে নির্মাতা তানভীর মোকাম্মেলের ‘হুলিয়া’ নামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে বড়পর্দায় পা রাখেন হুমায়ুন ফরীদি। পরবর্তীতে বাংলা সিনেমার জগতে এক অধ্যায় হয়ে ওঠেন তিনি। একে একে উপহার দিতে থাকেন অসংখ্য জনপ্রিয় চলচ্চিত্র।
‘মাতৃত্ব’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান হুমায়ুন ফরীদি। বাংলাদেশ সরকার ২০১৮ সালে, তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করেন।
হুমায়ুন ফরীদির অন্যতম জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলো হচ্ছে- ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘ভণ্ড’, ‘ঘাতক’, ‘ব্যাচেলর’, ‘জয়যাত্রা’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘টাকার অহংকার’, ‘অধিকার চাই’, ‘সন্ত্রাস’, ‘দহন’, ‘লড়াকু’, ‘দিনমজুর’, ‘বীর পুরুষ’, ‘বিশ্ব প্রেমিক’, ‘আজকের হিটলার’, ‘দুর্জয়’, ‘শাসন’সহ অসংখ্য সিনেমা উপহার দিয়েছেন এই কিংবদন্তি ।
এছাড়া অভিনেতার উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হলো ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘নিখোঁজ সংবাদ’, ‘হঠাৎ একদিন’, ‘পাথর সময়’, ‘সংশপ্তক’, ‘সমূদ্রে গাংচিল’, ‘কাছের মানুষ’, ‘মোহনা’, ‘নীল নকশাল সন্ধানে’, ‘দূরবীন দিয়ে দেখুন’, ‘ভাঙনের শব্দ শুনি’।
২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান জনপ্রিয় অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৬০।
হুমায়ুন ফরীদির প্রয়াণে ঢালিউড চলচ্চিত্রাঙ্গনে যে শূণ্যতা তৈরি হয়েছে , সেটা অপূরণীয়।
Leave a comment