গোপালগঞ্জে গত ১৬ জুলাই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘জুলাই পদযাত্রা’ ঘিরে সহিংসতায় গুলিতে নিহত তিনজনের লাশ আজ সোমবার কবর থেকে উত্তোলন করা হবে। ময়নাতদন্ত ছাড়াই তড়িঘড়ি করে দাফন করা ওই তিনজন হলেন—রমজান কাজী (১৮), ইমন তালুকদার (১৮) এবং সোহেল রানা মোল্লা (৩৫)। নিহতদের পরিবারের অভিযোগ ও মামলা গ্রহণের পর আদালতের নির্দেশে পুনরায় লাশ উত্তোলনের এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, আজ দুপুরে গোপালগঞ্জ পৌর এলাকার গেটপাড়া কবরস্থান থেকে রমজান ও ইমনের এবং টুঙ্গিপাড়ার পারিবারিক কবরস্থান থেকে সোহেলের লাশ তোলা হবে। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ পাঠানো হবে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে।
সকাল থেকে কবরস্থানে পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও দুপুর ১২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে পৌঁছাননি। তবে লাশ উত্তোলনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। গতকাল রোববার গোপালগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোমানা রোজী এই তিনজনের লাশ উত্তোলনের নির্দেশ দেন।
১৬ জুলাইয়ের সহিংসতা নিয়ে এখনো বিস্তর বিতর্ক রয়েছে। এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়, চলে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও গুলি। ওই ঘটনায় চারজন নিহত হন। এর মধ্যে রমজান, ইমন ও সোহেলের দাফন করা হয় ময়নাতদন্ত ছাড়া। এমনকি পুলিশের পক্ষ থেকেও কোনো সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়নি। সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যাওয়া অপর এক ব্যক্তির ময়নাতদন্ত হয়। তবে দীপ্ত সাহা নামের আরেক নিহত ব্যক্তির লাশ দাহ করা হয়, ফলে তাঁর ময়নাতদন্ত সম্ভব হয়নি।
১৯ জুলাই নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের পর তদন্তের অংশ হিসেবে আদালতের নির্দেশে আজ লাশ তোলা হচ্ছে। গোপালগঞ্জের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অঙ্গনে এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া এখনও চলমান।
Leave a comment