বৃহস্পতিবার (২৯ মে) আজ আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস । এই দিনে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী সব দেশের শান্তিরক্ষীদের অসামান্য অবদান। ১৯৪৮ সালে বিশ্বের সংঘাতময় অঞ্চলগুলোতে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জন্ম হয় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের। এ বছর দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘দ্য ফিউচার অব পিসকিপিং’।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করা হবে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
গতকাল আইএসপিআর জানিয়েছে, সকালে শান্তিরক্ষীদের স্মরণে ‘শান্তিরক্ষী দৌড়/র্যালি-২০২৫’ এর মাধ্যমে ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী’ দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে। ১১টায় চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠানে আহত শান্তিরক্ষীদের জন্য সংবর্ধনা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ওপর বিশেষ উপস্থাপনার আয়োজন করা হবে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ । এ ছাড়াও সকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) প্রধান অতিথি হিসেবে ‘শান্তিরক্ষী দৌড়/র্যালি-২০২৫’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরার লক্ষে বিশেষ জার্নাল ও জাতীয় দৈনিকসমূহে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলে বিশেষ টকশো প্রচারিত হবে। বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে ইতোমধ্যে ‘শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের কার্যক্রমের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র’ প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আহত শান্তিরক্ষীদের সম্মানে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী, তিন বাহিনী প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পুলিশের মহাপরিদর্শক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ, শান্তিরক্ষা মিশনে সুনামের সঙ্গে কাজ করে আসছে। পেশাদার মনোভাব, অবদান ও আত্মত্যাগের ফলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে, বাংলাদেশ নিজের অবস্থানও সুসংহত করেছে।
২০০৩ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর ২৯ মে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস পালিত হয়। বিভিন্ন দেশের শান্তিরক্ষীদের মহান আত্মত্যাগকে স্মরণ করে ‘দিবসটি’ বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে । ইউক্রেনের শান্তিরক্ষী সংস্থা এবং ইউক্রেন সরকারের যৌথ প্রস্তাবনায় ২০০২ সালের ১১ ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের গৃহীত প্রস্তাব অনুযায়ী এ দিবসের রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়।
আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস প্রথম উদ্যাপন করা হয় ২০০৩ সালে । ১৯৪৮ সালে সংঘটিত আরব-ইসরায়েল যুদ্ধকালীন যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণে গঠিত জাতিসংঘ ট্রুস সুপারভিশন অর্গানাইজেশন (আন্টসো) দিনটিকে উপজীব্য করে ২৯ মে তারিখটি স্থির করা হয়। জাতিসংঘ ট্রুস সুপারভিশন অর্গানাইজেশনই হচ্ছে প্রথম জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী। তবে সশস্ত্র শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৫৬ সালে, সুয়েজ সংকটের সময়।
Leave a comment