বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মন্তব্য করে বলেছেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হতে হবে ।
নেতা-কর্মীদের ষড়যন্ত্রের পা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনাদের কাছে আমার একটা অনুরোধ, আমরা যেন কারো পাতানো ফাঁদে পা না দেই। তারা চেষ্টা করছে আমাদেরকে উত্তেজিত করে তাদের পাতা ফাঁদে পা দেওয়ার জন্য। শান্তিপূর্ণ ভাবে গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা।’
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ অপপ্রচার এবং মিডফোর্ডে হত্যাকাণ্ড ও সারাদেশে নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে সোমবার (১৪ জুলাই) এসব কথা বলেন তিনি।
‘তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে তারা গণতন্ত্রের শত্রু’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যারা আজকে তারেক সাহেবের বিরুদ্ধে কথা বলে তারা এ দেশের মানুষের বিরুদ্ধে কথা বলে। অশ্লীল ভাষায় তারেক রহমান সম্পর্কে তারা কথা বলেছে, স্লোগান দিয়েছে। তারা ভেবেছিল- কথাগুলো বললে, স্লোগান দিলে বিএনপি বোধহয় ঘরের মধ্যে ঢুকে যাবে। বিএনপি বারবার সমস্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে, সমস্ত আঘাত প্রতিহত করে উঠে দাঁড়িয়েছে। ফিনিক্স পাখির দল হচ্ছে বিএনপি।’
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে করে তারেক রহমান নিশ্চিত করে ফেলেছেন এইবার নির্বাচন হবে, তখন থেকেই তাদের মাথা বিগড়ে গেছে জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ সমস্ত পরিস্থিতি ধৈর্য ধরে মোকাবিলা করতে হবে। আমরা নির্বাচন চাই, যে সিদ্ধান্ত হয়েছে সেই সময়টাতে নির্বাচন চাই। ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই আমরা, আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে নতুন এক বাংলাদেশ নির্মাণ করতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘মিটফোর্ডে ঘটনাকে কেন্দ্র করে কয়েকটি রাজনৈতিক অঙ্গন, কয়েকটি চক্র দেশের রাজনীতিকে একেবারে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। এ চক্রান্ত নতুন নয়। এ ষড়যন্ত্র নতুন নয়। যখনই বাংলাদেশের মানুষ উঠে দাঁড়াতে চেয়েছে, মাথা উঁচু করে দাড়াতে চেয়েছে ঠিক সে সময়ই ষড়যন্ত্রকারীরা দেশকে আবার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।’
ষড়যন্ত্রকারীরা চেষ্টা করছে বাংলাদেশে যেন নির্বাচন না হয়- এমন অভিযোগ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘চক্রান্তকারীরা চেষ্টা করছে মানুষ ভোটাধিকার যেন প্রয়োগ করতে না পারে। বাংলাদেশে আবার একটা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা, অস্থিরতা সৃষ্টি করা, যেখানে গণতন্ত্র আবার কবর রচিত হবে। পরিষ্কার ঘোষণা, আমরা যেভাবে ফ্যাসিস্টকে বিতাড়িত করতে পেরেছি, ঠিক সেভাবেই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কোনোদিন যেন আবার ফ্যাসিস্ট চালু হতে না পারে অবশ্য তার ব্যবস্থাই আমরা করব’।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘যত ষড়যন্ত্রই করেন বিএনপিকে সহজে জনগণের মন থেকে উঠিয়ে ফেলা যাবে না। একটি লোক (চরমোনাই পীর) এবং তার দল (ইসলামী আন্দোলন) যারা বলছে, স্লোগান দিচ্ছে, আওয়ামী লীগ গেছে যেই পথে বিএনপি যাবে সেই পথে। আমাদের স্থায়ী ঠিকানা এই বাংলাদেশ। তারা বিএনপিকে এখন সহ্য করতে পারছে না, কিন্তু আওয়ামী লীগকে ঠিক সহ্য করতেন।’
মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় সমাবেশ ও মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, আবদুস সালাম আজাদ, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, যুব দলের সভাপতি এম মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন প্রমুখ।
ফকিরাপুল থেকে শুরু করে কাকরাইলের নাইটেঙ্গল মোড় পর্যন্ত মহানগর বিএনপির বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। মিছিলটি বিজয় নগর থেকে শুরু হয়ে কাকরাইল-মৎসভবন হয়ে প্রেসক্লাব গিয়ে শেষ হয়।
Leave a comment