
আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে শুক্রবার (৯ মে) রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন আন্দোলনকারীরা। বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার পাশের ফোয়ারা থেকে মিছিল বের করে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন তাঁরা।
নেতৃত্ব দেন জাতীয় নাগরিক প্ল্যাটফর্ম (এনসিপি)–এর মুখপাত্র হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি মঞ্চ থেকে বলেন, “বাংলাদেশের অগ্রগতি শুরু হবে সেদিন, যেদিন এই দেশ আওয়ামী লীগহীন হবে।” একইসঙ্গে তিনি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার প্রজ্ঞাপন না আসা পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বেন না বলেও ঘোষণা দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত থেকে যমুনার সামনের ফোয়ারার পাশে অবস্থান নেয় এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। রাত ১০টার দিকে শুরু হয় অবস্থান কর্মসূচি, যা ক্রমেই ব্যাপকতা পায়।
রাত একটার দিকে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন এবং দলের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা মিছিলে অংশ নেন। পরে হেফাজতে ইসলাম, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ আরও কয়েকটি ইসলামপন্থী দলের নেতা-কর্মীরা সেখানে যোগ দেন।
আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর আন্দোলনকারীরা যমুনার পাশ থেকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিতে শুরু করেন। আগে থেকেই তৈরি করা পাঁচটি পিকআপ ভ্যানে স্থাপিত মঞ্চকে ঘিরে চলে বিক্ষোভ, স্লোগান ও বক্তৃতা।
এনসিপির পাশাপাশি জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস ও ছাত্র সংগঠনগুলো—ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী ছাত্রশিবির, খেলাফত ছাত্র মজলিস—এই কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়।
জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুল ইসলাম মাসুদ, এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীসহ আরও অনেকেই মঞ্চে বক্তব্য দেন। তাঁরা সরকারের বিরুদ্ধে একযোগে আওয়াজ তুলেছেন, দাবি তুলেছেন “আওয়ামী লীগ মুক্ত বাংলাদেশ”-এর।
তবে অবরোধের ফলে শাহবাগ ও আশপাশের রাস্তায় যান চলাচলে চরম বিঘ্ন ঘটে। সাধারণ মানুষ পড়েন ভোগান্তিতে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এখনো পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ অবরোধ কার্যক্রম শুধু একটি দলের বিরুদ্ধে নয়, বরং সরকারের রাজনৈতিক ভিত্তিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করার একটি সমন্বিত প্রয়াস। এনসিপির নেতৃত্বে বিভিন্ন ইসলামপন্থী দল ও ছাত্র সংগঠনের এমন সম্মিলিত অবস্থান বিরোধী রাজনীতিতে নতুন মোড় নিতে পারে।
Leave a comment